কাস্ট: সান্যা মালহোত্রা, রাধিকা মদন, সুনীল গ্রোভার
পরিচালক: বিশাল ভরদ্বাজ
রেটিং: 3 স্টার (5-এর মধ্যে)
লেখক-পরিচালক বিশাল ভরদ্বাজ, হিন্দি ছবির অন্যতম প্রতিভা, রাজস্থানের এক গ্রামে দুই বোনের সম্পর্ককে কেন্দ্র করে ছবি তৈরি করেছেন। দুই বোনের মধ্যে সম্পর্ক একেবারেই ভাল না, তাঁরা পরস্পরের চক্ষুশূল। গ্রামবাসী এমন কী তাঁদের বাবাও তাঁদের মধ্যে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করে প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছে। ছবির শুরুর অংশে ডিওপি রঞ্জন পালিতের দুর্দান্ত চিত্রায়ণ দেখে বোঝা সম্ভব নয় যে ছবিতে ভারত ও পাকিস্তানের যুদ্ধের কথা বলা হয়েছে। ছবিতে যখন যুদ্ধ ও দেশভাগের কথা স্পষ্টভাবে বলা হয় তখন দর্শকরা ছবির অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝতে পারে।
চরণ সিং পথিকের গল্প 'দো বেহেন' অবলম্বনে তৈরি পাটাখা একটা এমন ছবি যেখানে বিভিন্ন উপাদানের সিনেমার প্রয়োজনে পর্যাপ্ত মিশেল ঘটেছে। ভরদ্বাজ থিয়েটারের গল্প বলার কায়দায় একটা গভীর গল্প বুনেছেন। দুর্দান্ত মিউজিকের ব্যবহার ছবিটাকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। সান্যা মালহোত্রা ও নবাগতা রাধিকা মদনের অভিনয় অনবদ্য। এছাড়া তাঁদের বাবার চরিত্রে বিজয় রাজ এবং সুনীল গ্রোভারের অভিনয় প্রশংসনীয়।

Pataakha Movie Review: ছবির একটা দৃশ্য। (সৌজন্যে ইউটিউব)
চম্পা কুমারী বা বড়কির চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাধিকা মদন, যে দুধের ব্যবসা করতে চায়। অন্যদিকে সান্যা মালহোত্রা গেন্দা কুমারী বা ছুটকির চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যে নিজেকে শিক্ষিত করে তুলতে চায়। তাঁরা দু’জনে দুই মেরুর বাসিন্দা হলেও একই পরিস্থিতির শিকার। তাঁদের জীবনের দুই পুরুষ- জগন (নমিত দাস) এবং বিষ্ণু (অভিষেক দুহান)- তাঁদের গ্রামের থেকে দূরে নিয়ে যেতে রাজি কিন্তু সমস্যা সেখানেই শেষ হয় না। পালিয়ে যাওয়ার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়।
এর আগে কোনও বলিউড অভিনেত্রী বড়কি ও ছুটকির মতো খারাপ আচরণ করেনি। তাঁরা চঞ্চল, তাঁদের মুখের ভাষা খারাপ, কেমন দেখাচ্ছে সে বিষয়ে তাঁদের কোনও মাথা ব্যথা নেই। কিন্তু দুই বোনের একজন কিছু একটা কাজ করলেই অপরজনকেও তাঁর সঙ্গে পাল্লা দিতেই হবে। তাঁদের সম্পর্ক কেমন তা বোঝা যায় তাঁদের মারামারি দেখলেই।

Pataakha Movie Review: ছবির একটা দৃশ্য। (সৌজন্যে ইউটিউব)
পাটাখায় দুই বোনের ভাল সম্পর্ক দেখানো হয়নি। রোম্যান্স তাঁদের জন্য নয়। দিপ্পার (সুনীল গ্রোভার) তাঁদের একমাত্র ভরসার মানুষ। ছবির বেশিরভাগ অংশেরই শুটিং হয়েছে প্রাকৃতিক আলোতে। রাতের সিনগুলোও বেশিরভাগ অন্ধকারেই শুট করা হয়েছে। তাঁদের অন্ধকার থেকে আলোর পথে অগ্রসর হওয়া তাঁদের ভিতরের শত্রুর সঙ্গেই লড়াইয়ের প্রতিচ্ছবি হিসাবে ফুটে উঠেছে।
পাটাখা নিঃসন্দেহে সকলের পছন্দ হওয়ার মতো ছবি নয়। ছবির কিছু অংশ যেমন অতিরঞ্জিত মনে হয়েছে তেমনই ছবির অন্তর্নিহিত বার্তাটিও উল্লেখযোগ্য। আপনি গ্রহণ করুন বা আপনার হজম করতে সমস্যা হোক, পাটাখা কিন্তু বলিউডের মূল ধারার ছবির থেকে আলাদা, একথা আমরা জোর গলায় বলবোই।