কাস্ট: ভানিতা দাস, বাসন্তী দাস
পরিচালক: রিমা দাস
রেটিং: পাঁচে পাঁচ
2017 সালে ভারতের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসাবে জাতীয় পুরস্কার পাওয়া এবং অস্কারে মনোনীত হওয়ার আগে রিমা দাসের ভিলেজ রকস্টার্স ছবিটি গত এক বছর ধরে সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে বহুল চর্চিত বিষয় ছিল। ছবিটিকে শুধুমাত্র একটি মাস্টারপিস বললেও কম হয়। একটি মিরাকেলের থেকে কোনও অংশে কম নয় এই ছবি।

ভিলেজ রকস্টার ছবির একটা দৃশ্য। (সৌজন্যে ইউটিউব)
সাধারণত মাস্টারওয়ার্ক বলতে আমরা যা বুঝি ভিলেজ রকস্টার্স কোন দিক দিয়েই তা নয়। এখানে যে নিষ্পাপ গ্রাম্য সাদামাঠা প্রেক্ষাপট দেখানো হয়েছে তথাকথিত চলচ্চিত্রের শিল্পে কখনওই এমন দেখানো হয় না। যেখানেই এই ছবিটি দেখানো হয়েছে সেখানেই এটি প্রশংসিত হয়েছে এবং নানা পুরস্কার জিতেছে। গত তিন দশকে এটিই প্রথম অসমীয়া ছবি যা শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসাবে জাতীয় পুরস্কার জিতেছে। এটাই প্রথম কোনও অসমীয়া ছবি যা অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছে।
রিমা দাস এর লেখা, পরিচালনা, প্রযোজনা, সম্পাদনা এবং চিত্রগ্রহণ করা এই ছবিটি অদ্ভুত সুন্দর ভাবে কুটির শিল্পকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেছে। ছবিটিতে বর্ণিত হয়েছে আসামের একটি প্রত্যন্ত গ্রামের অদম্য প্রাণশক্তিতে পূর্ণ একটি মেয়ের জীবনের স্বপ্নের কথা, যে সমাজের বিভিন্ন কুসংস্কার উপেক্ষা করে একটি আসল গিটার কেনা এবং তার বন্ধু কিছু গ্রাম্য ছেলেদের নিয়ে একটি রক ব্যান্ড গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখে।

ভিলেজ রকস্টার ছবির একটা দৃশ্য। (সৌজন্যে ইউটিউব)
ভারতীয় মূলধারার চলচ্চিত্রের থেকে আলাদা এই ছবিটি আগামী শুক্রবার গোটা রাজ্যে এবং ভারতের বিভিন্ন মেট্রোপলিটন শহরে মুক্তি পেতে চলেছে। ছবি নির্মাণে বিভিন্ন সীমা অতিক্রম করে গেছে। মুক্তির পর ছবিটি কি এতদিনের বন্ধ দরজাগুলো খুলতে পারবে?
চিত্রনির্মাতা রিমা দাসের নিজ জন্মভূমির প্রতি একটি ট্রিবিউট হল এই ছবি। একই সঙ্গে তিনি ওই অঞ্চলের মানুষদের অদম্য ইচ্ছাশক্তির কথাও বর্ণনা করেছেন, যেখানে ধুনু (ভানিতা দাস) ও তার মাকে (বাসন্তী দাস) অসম্ভবকে সম্ভব করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে দেখা যায়। অবশ্যই ধুনু কোনও সাধারণ গ্রাম্য মেয়ে নয়। সে গরীব এবং সমাজে লিঙ্গ পক্ষপাতের শিকার। তবে তার মায়ের তাকে নারীশক্তির প্রতীক হিসাবে মানুষ করার ফলস্বরূপ ধুনু তার জীবনের বিভিন্ন বাধা সম্পর্কে বিশেষ জানতে পারেনি।
গ্রামের মেলায় একটি কনসার্ট দেখার পর থেকেই ধুনু নিজেও গান গাওয়ার এবং তার অন্যান্য ছেলে বন্ধুদের নিয়ে একটি রক ব্যান্ড গড়ার কথা ভাবে। গ্রাম্য পরিবেশে কাজটা খুব একটা সহজ না হলেও ধুনু পাশে তার মাকে পেয়ে যায়।
ধুনুর চরিত্রে ভানিতা দাস এবং তার মায়ের চরিত্রে বাসন্তী দাস একেবারেই যথাযথ এবং খুব সুন্দর ভাবে তারা সহজ-সরল গ্রাম্যতা ফুটিয়ে তুলেছেন।